মেকআপের ক্ষেত্রে যেসব প্রসাধনী এখন বেশি জনপ্রিয় তার মধ্যে হাইলাইটার অন্যতম। রূপচর্চায় অ্যালোভেরা যেভাবে ব্যবহার করবেন তবে হাইলাইটার ব্যবহারে রয়েছে নানা জটিলতাও। হাইলাইটার মূলত মুখের ত্বক নরম ও উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। তবে অনেক বিশেষজ্ঞদের মতে, নিখুঁতভাবে হাইলাইটার ব্যবহারের জন্য আগে বেশ কয়েক দিন প্র্যাকটিস করে নিতে হয়। এ ছাড়া নিজের ত্বকের রং এবং ধরন সম্পর্কেও জানা থাকতে হবে। সে অনুযায়ী ব্যবহার করতে হবে হাইলাইটার।
রূপচর্চায় অ্যালোভেরা যেভাবে ব্যবহার করবেন
নিজের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে সেই প্রাচীনকাল থেকে নারীরা বিভিন্ন প্রসাধনসামগ্রী ব্যবহার করে আসছেন। প্রসাধনের জনপ্রিয়তা এখনো তেমন রয়েছে নারীদের কাছে।
অ্যালোভেরা জেল মুখে লাগানোর সঠিক সময়?
রাতে মুখে অ্যালোভেরা জেল লাগানোর অন্যতম সুবিধা হল এটি একটি শক্তিশালী ময়েশ্চারাইজার হিসাবে কাজ করে যা আপনার ত্বককে গভীরভাবে হাইড্রেট করে, এটি রাতের বেলা ব্যবহারের জন্য নিখুঁত করে তোলে। এটি দিনের মধ্যে হারিয়ে যাওয়া আর্দ্রতা পূরণ করতে সাহায্য করে, আপনার ত্বককে নরম, কোমল এবং সকালে উজ্জ্বল করে।
যেমন, ত্বক যদি তেলতেলে হয় তা হলে পাউডার হাইলাইটার ব্যবহার করা উচিত। ত্বক শুষ্ক ধরনের হলে বেছে নিতে হবে তরল হাইলাইটার। কারণ, প্রতিবার হাইলাইটার দিয়ে ত্বক উজ্জ্বল করার ঝামেলা অনেক। কেননা নির্দিষ্ট সময় পর তা সঠিকভাবে পরিষ্কার করে নিতে হয়। আবার হাইলাইটার পণ্যগুলোর দামও অনেক।
তাই বেছে নেওয়া উচিত প্রাকৃতিক উপাদান। যেমন অ্যালোভেরা যার বাংলা নাম ঘৃতকুমারী। অনেকেই হয়তো জানেন না, অ্যালোভেরা একটি প্রাকৃতিক হাইলাইটার, যা ত্বকের জন্যও নিরাপদ। প্রাকৃতিক উপাদান বা উপকরণ নিয়মিত ব্যবহারের মাধ্যমে যে কেউ প্রাকৃতিকভাবেই মুখের ত্বক হাইলাইট করে নিতে পারেন।
অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী প্রাচীনকাল থেকেই রূপচর্চার এক সমাদৃত উপাদান হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট যা ত্বকে বয়সের ছাপ পড়া, ব্রণের দাগ দূর, ট্যান দূর করার মতো নানা রকম সমস্যার হাত থেকে রক্ষা করে। এর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা হলো এটি নিয়মিত ব্যবহারের ফলে ত্বকে আসে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা যা অনেকটাই হাইলাইটারের মতো মনে হবে।
অ্যালোভেরার ব্যবহার খুব সহজ আর সময়ও বেশি লাগে না। একটা অ্যালোভেরার পাতা কিনে তা ছোট টুকরা করে এক পাশের খোসা ছাড়িয়ে ভালোমতো ধুয়ে ব্যবহার করতে হবে। অনেকের হয়তো অ্যালোভেরা ব্যবহার করলে নানা রকম অ্যালার্জির সমস্যা দেখা যায়। সেক্ষেত্রে, ব্যবহারের আগে অল্প একটু অ্যালোভেরা নিয়ে তা হাতের ওপর বা গলার ওপর দিকটায় একটু লাগিয়ে দেখতে হবে, তা আপনার ত্বকের সঙ্গে মানিয়ে যাচ্ছে কি না।
ত্বককে উজ্জ্বল আর প্রাকৃতিকভাবে লাবণ্যময় করে তুলতে অ্যালোভেরার ব্যবহার শুরু করতে পারেন। বাজারে অ্যালোভেরার স্টেমও পাওয়া যায়। চাইলে সেগুলো কিনে ব্যবহার করতে পারেন।
শুধু ত্বকেই নয় চুলের যত্নে অ্যালোভেরা বেশ কার্যকর। যেমন যাদের চুল খুব শুষ্ক এবং মাথার ত্বকে অ্যালার্জি বা চুলকানি দেখা আছে তারা এটি ব্যবহার করতে পারেন। অ্যালোভেরার অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান চুল পড়া ও খুশকির সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এমনকি চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতেও এটি কার্যকর। সে জন্য অ্যালোভেরার রসের সঙ্গে আমলকীর রস মিশিয়ে নিয়মিত চুলে লাগাতে হবে। ত্বকের র্যাশ, চুলকানি, রোদে পড়া দাগ দূর করতেও অ্যালোভেরা অতুলনীয়।
অন্দরসজ্জাতেও অ্যালোভেরার গুরুত্বও অপরিসীম। ঘরের বাতাস পরিশুদ্ধ করতে এয়ার পিউরিফায়ার বসাতে হচ্ছে। কিন্তু একটা অ্যালোভেরা গাছ (এ ঘৃতকুমারী গাছ) ঘরের বাতাসের গুণাগুণ উন্নত করে দিতে পারে। একটি অ্যালোভেরা গাছ ৯টি এয়ার পিউরিফায়ারের কাজ করে থাকে। ইন্ডোর প্ল্যান্টেশনের মধ্যে স্নেক প্ল্যান্ট হলো সবথেকে জনপ্রিয় একটি গাছ। অনেক ঘরের ডাইনিং, বেডরুমে এই গাছ লাগিয়ে রাখেন। ঘরের সৌন্দর্যের পাশাপাশি এই গাছ বাতাসে টক্সিন শোষণ করে নেয় এই গাছ।
চুল পড়া রোধের জন্যও অ্যালোভেরা বেশ কার্যকর। এ জন্য এর সঙ্গে ডিমের কুসুম ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। এরপর এটি আধঘণ্টার জন্য চুলে রেখে শ্যাম্পু করে নিন। এই প্যাক চুল পড়া রোধ করার পাশাপাশি চুলের বৃদ্ধিতেও সমানভাবে কার্যকর।